গোনোরিয়া শব্দটা ল্যাটিন ভাষা থেকে এসেছে, গোনোস মানে হল বীজ আর রিয়া মানে হল প্রবাহ।এটা হল একধরনের
যৌনসহবাসজনিত ব্যাক্টেরিয়াঘটিত রোগ যা মানুষের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লির (mucous membranes) কে আক্রান্ত করে।এটা সবচেয়ে বেশি যৌন রোগগুলার মধ্যে ২য়। এই ব্যক্টেরিয়া মানুষের শরিরের উষ্ণ এবং ভেজা অংশে থাকে আর এগুলা মারাত্মক সংক্রামক। গোনোরিয়া রোগের কারনে অনেক মেয়েদের সন্তান হয়না। খুব কম সংখ্যক মহিলাদের এ রোগের ল্যক্ষন স্পশটো বোঝা যায়, বেশির ভাগ সময় নিজেদের অবস্থার ব্যপারে তাদের ধারনা থাকেনা।যদি এ রোগ চিকিৎসাহীন অবস্থায় থাকে তবে তা শ্রোণী প্রদাহমূলক ব্যাধি (pelvic inflammatory disease), epididymis প্রদাহ,প্রস্টেট গ্রন্থি অথবা মূত্রনালির গঠন(পুরুষ) এ রোগের সৃষ্টি করে যা থেকে নিরাময় হতে অনেক বেশি জটিল।
Neisseria gonorrhoeae নামের ব্যাক্টেরিয়ার বিস্তার লাভের কারনে গোনোরিয়া হয়। এই রোগ বিস্তার লাভ করে এবং বেচে থাকে চোখ, মুখ,পুরুষাঙ্গ, যোণি, গলা, মলদ্বারে, এবং এই রোগ ছড়ায় যৌনসহবাসের কারনে।
একবার কেউ আক্রান্ত হয়ে পড়লে শরীরের অন্যান অংশে এই ব্যাক্টেরিয়া দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।তাৎক্ষনিক ভাবে চোখের ভিতর চুল্কাতে পারে। সন্তান জন্মদেবার সময় শিশুরও এই রোগ হতে পারে।
যেকোন মানুষ যে যৌনসহবাসে সক্ষম তার এ রোগ হতে পারে। ১৫-৩০ এই বয়সের কিশোর-কিশোরি ও তরুন-তরুনীদের ভিতরে এই রোগের প্রভাব বেশি।অতীতে যার একবার এই রোগের চিকিৎসা হয়েছে পরে এই ব্যক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে তার শরীরে আর কোন প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে না।
সংস্পর্শ এ আসার ২ থেকে ১০ দিন এর ভিতরে ল্যক্ষন দেখা দেয়।৩০ দিন লাগে পুরোপুরি প্রকাশ হতে এবং মাঝেমধ্যে এর লক্ষ্যংনগুলা এতই হালকা থাকে যে অন্য কোন কিছু হিসাবে ভুল হয়।বেশিরভাগ মহিলাদের কোন লক্ষ্যন দেখা যায়না। পুরুষদের ক্ষেত্রে নিম্ন লক্ষ্যনগুলা দেখা যায়।
১।হলুদ, সবুজ অথবা সাদা বস্ত পুরুষাঙ্গ থেকে নির্গত হয়।
২।অণ্ডকোষে ফোলাভাব দেখা যায় বা ব্যথা হয়।
৩।প্রসাবে জাল্বাপোড়া হয়।
মহিলাদের ক্ষেত্রে নিম্ন লক্ষ্যনগুলা দেখা যায়।
১।হলুদ, সবুজ অথবা সাদা বস্তূ স্ত্রীযোনি থেকে নির্গত হয়।
২।প্রসাবে জাল্বাপোড়া হয়।
৩।চোখ গলাপি হয়ে যায়।
৪।মাসিকের সময় অনিয়মিত রক্তপাত হয়।
৫।স্ত্রীযোনিমূখ ফুলে যায়।
গোনোরিয়া রোগি হিসাবে সন্দেহ হলে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা পুরুষদের মুত্রনালি এবং মেয়েদের গলা থেকে পরিক্ষাগারে টেস্ট করবার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে।মলদ্বারের ব্যপারটাও খেয়ালে রাখা হয়। এমন অনেক ঘটনাতে দুটোই একসাথে দেখা যায়। টেস্টের রেপরতগুলা আস্তে কিছুদিন লাগে।প্রসাব পরিক্ষারও দরকার হয়।
ব্যক্টেরিয়াজনিত কারনে যেহেতু গনোরিয়া হয় সেহেতু এন্টিবায়োটিক ঔষুধ দেয়া হয়।এটা খাবার জন্য অথবা ইঞ্জেকশান করে নিতে হয়। চিকিৎসাচলাকালিন সময়ে যৌনসহবাস থেকে বিরত থাকা ভাল।ভাল বোধ করলেই যে রোগ সেরে হয়ে যাবে এটা ঠিক নয়।আক্রান্ত ব্যক্তির উচিৎ বিগত একমাসে যাদের সাথে সে সেক্স করেছে তাদের সাবধান করে দেওয়া।
কন্ডম ব্যবহার করা হল গোনোরিয়া থেকে বাচার সবচেয়ে ভাল উপায়।যারা অনেকের সাথে সেক্স করে বা এলমেলো ভাবে সেক্স করে তাদের মধ্যে এই রোগটা ছড়ায় বেশি।গোনোরিয়ার সামান্যতম লক্ষ্যন দেখা গেলেও ডাক্টার এর কাছে যাবেন অবহেলা করবেননা।

No comments:
Post a Comment